এবার ইসলামি শরীয়তের দ্বিতীয় ভিত্তি হলো নামাজ। এটি একজন মুমিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বাধ্যতামূলক ইবাদত। নামাজ সব পাপকাজ থেকে বিরত রাখে। এ বিষয়ে কোরআনে এসেছে, নিশ্চয়ই নামাজ অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।-সূরা আনকাবুত (২৯) : ৪৫
এদিকে একজন মুমিন যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, সুন্নাহ পদ্ধতিতে সময়মতো নামাজ আদায় করতে হবে। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ আদায়ের যে পদ্ধতি শরিয়তে বলা হয়েছে, অস্বাভাবিক ও বিশেষ অবস্থার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ সাধ্যের বাইরে কোনো হুকুম বান্দার ওপর আরোপ করেন না ‘ (সুরা বাকারা: ২৮৫)
কোরআনের অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তারা দাঁড়ানো, বসা এবং শোয়া অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। (আলে ইমরান: ১৯১) এ বিষয়টি নিয়ে ইমাম দাহহাক বলেন, এই আয়াতে অসুস্থ-অপারগ ব্যক্তিদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী (যেভাবে পারে) ইবাদত পালন করবে। (আল মুহিতুল বুরহানি: ৩/২৬)
তাই কোনো মুমিন যখন বন্যার পানিতে আটকা পড়ে যান এবং স্বাভাবিক পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে না পারেন তখন তার নামাজ আদায়ের পদ্ধতিতে ক্ষেত্রবিশেষে নিম্নলিখিত ছাড় অনুমোদিত হয়— বন্যার্ত ব্যক্তি যদি পানিতে আটকা পড়ে যায় এবং তার কাছে নৌকা থাকে তো নামাজ নৌকাতে পড়ে নেবে। আর যদি নৌকা না থাকে তাহলে সে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার অপেক্ষা করবে। অতঃপর ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে পানিতেই নামাজ পড়ে নেবে। এক্ষেত্রে পানিতে দাঁড়িয়ে যেভাবে সম্ভব সেভাবেই নামাজ আদায় করবে।
যেমন—পানি যদি অল্প হয় এবং কেউ রুকু করতে সক্ষম হন তাহলে রুকু সহকারে নামাজ আদায় করতে হবে। আর সেজদা করে নেবে ইশারায়। আর যদি কেউ রুকু করতেও সক্ষম না হন তাহলে পানিতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়কালে রুকু-সেজদা উভয়টা ইশারায় করে নেবে। (হাশিয়াতুত তাহতাবি আলা মারাকিয়িল ফালাহ: ৪০৭)
এ ছাড়া পানিতে আটকে পড়া ব্যক্তির ওপর জুমার নামাজ ওয়াজিব নয়। কেননা জুমার নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে জামাত শর্ত। জুমার নামাজের জন্য ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিনজন মুসল্লি হতে হবে। ইমাম খুতবা দেবেন, বাকি তিনজন খুতবা শুনবেন এবং জুমায় শরিক থাকবেন। এর চেয়ে কম মুসল্লি হলে জুমা পড়া যাবে না। (রদ্দুল মুহতার: ৩/২৪)